লোগো ডিজাইন প্রতিযোগিতার ভাল-মন্দ

কোন কাজ করার জন্য যখন নির্ভরশীল নির্দিস্ট কাউকে পাওয়া যায় না তখন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, এই পদ্ধতি চালু রয়েছে শতশত বছর ধরে। তারই পথ ধরে ফ্রিল্যান্সিং কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাজ করানো জনপ্রিয় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। কোন কোন জব সাইট শুধুমাত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই কাজ করার ব্যবস্থা রেখেছে।
লোগো ডিজাইন যখন কাজ তখন এই পদ্ধতি আরো বেশি কার্যকর। ডিজাইনার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী লোগো তৈরী করে জমা দেবেন। ক্লায়েন্ট নানা ধরনের লোগো থেকে নিজের পছন্দমত লোগো বেছে নেবেন। ৯৯-ডিজাইন, লোগো টুর্নামেন্ট কিংবা জবসাইট হিসেবে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সারে সবসময়ই শতশত প্রতিযোগিতার দেখা পাওয়া যাবে। প্রতিযোগিতা কিভাবে হয় কিছুটা ধারনা পেতে পারেন এভাবে। যার লোগো প্রয়োজন তিনি লোগো তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এবং পুরস্কারের পরিমান প্রকাশ করেন। যেমন ৯৯-ডিজাইন এ সাধারন লোগোর জন্য ৪৯৯ ডলার, উচুমানের লোগোর জন্য আরো বেশি। ফ্রিল্যান্সারে একসময় ৩০০ ডলারের একটি নিয়ম ছিল, বর্তমানে সেটা কমিয়ে ৩০ ডলারে আনা হয়েছে। ক্লায়েন্ট ৩০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০ কিংবা হাজার ডলার দিতে পারেন পুরস্কার হিসেবে। টাকা কমিয়ে আনায় কাজের সংখ্যা বেড়েছে বিপুল পরিমান। অন্যদিকে কমটাকায় কাজের সুযোগের কারনে তুলনামুলক কম অভিজ্ঞ ডিজাইনাররাও সেখানে ভাল করার সুযোগ পাচ্ছেন।
লোগো ডিজাইন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন কিনা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থার ভালমন্দ বিষয়ক তথ্যগুলি সহায়তা করতে পারে। লোগো ডিজাইন প্রতিযোগিতার ভাল দিক
. বিড করা প্রয়োজন নেই। কাজের বর্ননা দেখে ডিজাইন করে জমা দিন। নবিনদের যে কেউ নতুন আইডিয়া দিয়ে অভিজ্ঞদের টপকে যেতে পারেন।
. সাধারনভাবে অর্থের পরিমান বেশি। বিড করে অনেক সময় ৫ ডলারেও লোগো ডিজাইন করতে হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে সাধারনভাবে প্রতিযোগিতার পুরস্কারের পরিমান এর থেকে বেশি।
. নিজের পছন্দমত কাজ করার সুযোগ থাকে এভাবে। ক্লায়েন্ট আগে থেকে সবকিছু বুঝে সঠিক নির্দেশ দেবেন এমন কথা নেই (যা বিড করা কাজের ক্ষেত্রে করা হয়)। ডিজাইনার যেহেতু এই বিষয়ে বেশি জানেন, তিনি নিজের সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে চমকপ্রদ কিছূ করে দেখাতে পারেন। এজন্য অনেক প্রতিযোগিতায় ক্লায়েন্ট ডিজাইনারের পছন্দমত কাজ করতে উতসাহ দেন।
. দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন অত্যন্ত উপযোগি। অধিকাংশ সময় বিভিন্ন প্রতিযোগির পাঠানো ডিজাইন দেখার সুযোগ থাকে (সবসময় না)। সেগুলি দেখে নতুন আইডিয়া, পদ্ধতি ইত্যাদি অনুসরন করে নিজেকে আরো দক্ষ করে তোলা যায়। যে ডিজাইন প্রথম হয়েছে সেটা বিশ্লেষন করে নিজেকে সেই পর্যায়ে নেয়ার চেষ্টা করা যায়।
. পরিচিতি বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া অত্যন্ত সহায়ক। ফ্রিল্যান্সার সাইটে বিড করলে প্রোফাইলে ১ পয়েন্ট যোগ হয়, প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে ১০ পয়েন্ট। এছাড়া প্রতিযোগিতায় প্রথমদিকে থাকলে সেখানে নাম দেখে অনেক ক্লায়েন্ট সরাসরি যোগাযোগ করেন। ফলে কাজ পাওয়া সহজ হয়।
মন্দ দিক
প্রতিযোগিতার মাধ্যমে লোগো ডিজাইন পদ্ধতির সবকিছুই ভালো এটা মনে করার সুযোগ নেই। এর কিছু মন্দ দিকও রয়েছে।
. ডিজাইন করেছেন কাজেই টাকা পাবেন, এই নিয়ম এখানে কাজ করে না। যিনি বিজয়ী হবেন সেই একজন পুরস্কারের টাকা পাবেন, অন্যরা কিছুই পাবেন না। কাজেই মনে হতে পারে বিনা টাকায় কাজ করছেন।
. প্রতিয়োগিতায় অংশ নেন সারা বিশ্ব থেকে অভিজ্ঞ ডিজাইনাররা। কাজেই প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি। লোগো ডিজাইন সম্পর্কে ভালভাবে না জেনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভাল এবং মন্দ দুদিক বিবেচনা করে একথা অনায়াসে বলা যায়, একদিকে শেখা, নিজের দক্ষতা বাড়ানো অন্যদিকে আয় সবকিছুর সুযোগ থাকার কারনে এই ব্যবস্থা থেকে দুরে থাকার কোন কারন নেই। বরং যারা নিয়মিতভাবে বিড করে কাজ করেন তারাও এতে অংশ নিতে পারেন।
যে কোন সময় প্রতিযোগিতার সাইটগুলিতে সদস্য হয়ে সাথেসাথেই অংশ নেয়া শুরু করতে পারেন। এতে কোন খরচ নেই। তবে মনে রাখা ভাল সব সাইটের টাকা দেয়ার পদ্ধতির সাথে বাংলাদেশে অর্থ লেনদেনের পদ্ধতি মানানসই না (আপাতত। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী মে মাসে বাংলাদেশে পেপল চালু হবে। সেটা হলে এই সিমাবদ্ধতা থাকবে না)।
বহুল ব্যবহৃত ফ্রিল্যান্সারের সদস্য হয়ে কাজ শুরু করতে পারেন এখনই।
www.freelancer.com/
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment