বেশি ভিজিটর পাওয়া এবং ভিজিটর ধরে রাখার উপায়

ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ যাই বলুন না কেন, তার প্রধান লক্ষ্য থাকে বেশি পরিমান ভিজিটর পাওয়া। এরসাথে অর্থের বিষয় তো আছেই, সেটা না থেকে নিতান্ত ব্যক্তিগত ব্লগ হয় তাহলেও আপনি আশা করেন বেশিসংখ্যক মানুষ সেটা দেখুক। নতুন ব্লগার তো বটেই, অভিজ্ঞ ব্লগারের কাছেও এটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। ক্রমপরিবর্তনশীল ইন্টারনেটে ক্রমাগত পরিবর্তন করেই একাজে সাফল্যলাভ করতে হয়। কিভাবে বেশি ভিজিটর পাওয়া যায়, কিভাবে ভিজিটরকে ধরে রাখা যায়, এর পেছনে কি কি বিষয় কাজ করে দেখে নেয়া যাক। প্রথমে জানা যাক হিসেব কিভাবে করা হয়। সবচেয়ে সহজ যে হিসেব প্রকাশ করা হয়, ভিজিটরের সংখ্যা তার টেকনিক্যাল নাম হিট। অর্থাত সাইটটিতে কতজন, কতবার ক্লিক করেছেন। অনেক ওয়েবসাইটে এই সংখ্যা দেখানো হয়। সংখ্যাটি কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরী করতে পারে। ভাবতে পারেন ১ লক্ষ হিট অর্থ সেখানে ১ লক্ষজন ভিজিট করেছেন। আসলে বিষয়টি অন্যরকম। ধরুন আপনি সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে গেলেন। আপনার হোমপেজে যাওয়া একটি হিট। সেটা কাউন্টারে যোগ হল। আপনি বিভিন্ন খবরের শিরোনাম দেখে ৫টি সংবাদ পড়ার জন্য ক্লিক করলেন, আরো ৫টি হিট। ৫বার হোমপেজে ফেরত গেলেন, আরো ৫ হিট। আপনি যতক্ষন সেখানে থাকবেন, যতবার ক্লিক করবেন ততবার সংখ্যা বাড়তে থাকবে। সংবাদপত্র যদি কিছুক্ষন পরপর আপডেট করে তাহলে আপনি দিনে কয়েকবার সেখানে যেতে পারেন, প্রতিবাদ ডজনখানেক হিট হতে পারে। কাজেই সংবাদপত্রে যদি ১ লক্ষ হিট দেখেন জানবেন সেখানে মুল ভিজিটরের সংখ্যা অনেক কম। আবার আপনি হয়ত বিশেষ কোন তথ্য জানার জন্য কোন সাইটে গেলেন (ধরুন উইকিপিডিয়া)। তথ্যটি পড়লেন। আপনার যেহেতু সেখানে অন্য বিষয় প্রয়োজন নেই সেহেতু আপনি পড়া শেষ করে অন্য সাইটে চলে গেলেন। আপনার কারনে সেখানে একটি হিট জমা হল। কাজেই কোন সাইটের মুল হিসেব হিট দিয়ে করা যায় না, বরং বেশকিছু বিষয় এরসাথে জড়িত। সেগুলি হচ্ছে, ইউনিক ভিজিটর :নির্দিষ্টভাবে কতজন পৃথক পৃথক ভিজিটর সাইটে গেছেন। ভিজিটরের সংখ্যা পাওয়া যায় এখান থেকে। নিউ ভিজিটর :মোট ইউনিক ভিজিটরের মধ্যে কতজন প্রথমবার এই সাইটে এসেছেন। এর দুটি দিক রয়েছে। নতুন ভিজিটর বেশি হওয়ার অর্থ মানুষ আপনার সাইট ঠিকভাবে খুজে পাচ্ছে। আর ফিরে আসা ভিজিটর বেশি থাকার অর্থ তারা আপনার সাইট পছন্দ করছেন। গড় ভিজিটের সময় :গড়ে ভিজিটর কতক্ষম সময় কাটিয়েছেন। যত বেশি সময় কাটান সেই সাইটকে তত আকর্ষনীয় ধরা হয়। সাধারনত ২ মিনিটের বেশি সময় ভাল বলে ধরা হয়। অপ্রাসংগিক হলেও উল্লেখ করতে হচ্ছে এই সাইটে গড় ভিজিটের সময় প্রায় ১০ মিনিট। এর অর্থ ভিজিটররা এই সাইট আগ্রহের সাথে পড়েন। বাউন্সিং রেট :কোন কোন ভিজিটর সাইটে আসার সাথেসাথে সেখান থেকে চলে যান। যখন সাইট সম্পর্কে যে ধারনা করে এসেছিলেন সেটা পুরনা না হওয়া বুঝায়। ৪০% পর্যন্ত বাউন্সরেট গ্রহনযোগ্য। যদি ৭০% এর বেশি হয় তাহলে ধরে নিতে হয় কোথাও কোন সমস্যা রযেছে। পেজ পার ভিজিট :ভিজিটর গড়ে কতগুলি পেজ ভিজিট করেছেন। সাইট অনুযায়ী এটা কমবেশি হতে পারে। ব্লগে সাধারনত নতুন পোষ্টগুলিই দেখে ভিজিটররা, আর তথ্যবহুল সাইটে পুরনো পেজগুলি বেশি জনপ্রিয় হতে পারে। ল্যান্ডিং পেজ: ভিজিটর সাইটে আসার সময় প্রথম কোন পেজে গেছেন। যে পোষ্ট বেশি আকর্ষনীয়, বেশি প্রচার পেয়েছে, সার্চ ইঞ্জিনে প্রাধান্য পেয়েছে সাধারনত ভিজিটর সেখানে যান। ল্যান্ডিং পেজ ভিজিটর ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপুর্ন। ভিজিটর যদি সেখানে ২ মিনিট থাকেন তাহলে তিনি সাইটের অন্যান্য বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিতে পারেন। কাজেই ল্যান্ডিং পেজ শনাক্ত করে তাকে আকর্ষনীয় করা একটি গুরুত্বপুর্ন কাজ। ট্রাফিক সোর্স :কতজন ভিজিটর কিভাবে আপনার সাইটে এসেছেন। সরাসরি সাইটের এড্রেস ব্যবহার করে, অন্য সাইটের রেফারেন্সে, সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ইত্যাদি। এথেকে আপনি ধারনা পেতে পারেন কোনদিকে আপনার প্রচারনা বাড়ানো উচিত। সার্চ কি ওয়ার্ড :ভিজিটর কি শব্দ লিখে সার্চ করে আপনার সাইট পেয়েছেন বিষয়টি গুরুত্বপুর্ন। ভিজিটরের টাইপ করা শব্দ এবং আপনার পোষ্ট টাইটেলে বা ট্যাগে পার্থক্য থাকলে পরিবর্তন করে নিন। লোকেশন :ভিজিটর কোন এলাকা থেকে এসেছেন। যে যায়গার ভিজিটর বেশি তাদের দিকে দৃষ্টি রেখে ওয়েবপেজে পরিবর্তন আনতে পারেন। যেমন এই সাইটের ভিজিটরদের প্রধান ৩টি দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত এবং আমেরিকা। এই বিষয়গুলি নিয়মিতভাবে লক্ষ করে অনায়াসে বেশি ভিজিটর পেতে পারেন এবং তারা কি আশা করেন সেটা জেনে সেভাবে পরিবর্তন এনে তাদের ধরে রাখতে পারেন। প্রশ্ন করতে পারেন এসব তথ্য জানবেন কিভাবে? সব ব্লগিং সফটঅয়্যারে এসব তথ্য জানার ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরে গুগলের এনালাইটিকস নামে একটি সেবা রয়েছে। সেখানে সাইটের ঠিকানা দিলে কয়েক লাইন কোড পাবেন। কোডটি কপি করে আপনার সাইটে নির্দিষ্ট যায়গায় পেষ্ট করে দিন। কিভাবে করতে হবে সেকথা তাদের ওয়েবসাইটেই পাবেন। প্রতিটি ভিজিটের বিস্তারিত তথ্য আপনার রিপোর্টে জমা হবে। www.google.com/analytics/
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment