স্বাস্থ্য: মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায়

দৈনন্দিন জীবনে মানসিক চাপের প্রভাব অত্যন্ত প্রকট- বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ তাদের কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ অনুভব করে এবং প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ মনে করে তাদের এই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের সুষ্ঠু পরামর্শের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কর্মব্যস্ততার দরুন তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে পারেন না। তাই, মানসিক চাপের ফলশ্রুতিতে তারা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ নানা জীবনঘাতি রোগে আক্রান্ত হন। বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব সহজ উপায়েই এই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখানে পাঁচটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায় উল্লেখ করা হল।


১। কাছের মানুষদের কাছে আপনার মানসিক চাপের কথা শেয়ার করুনঃ খুব প্রচলিত একটি কথা আছে, “Sharing is caring”। আপনার দৈনন্দিন মানসিক চাপের কথা আপনার সহকর্মী, পরিবার অথবা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মানসিক চাপের আধিক্য অনেকাংশে হ্রাস করা যায়। তাই, সংকোচ কিংবা অবহেলা না করে আপনার মানসিক অস্থিরতার কথা আপনার কাছের মানুষদের কাছে এখনই শেয়ার করে ফেলুন।

২। আপনার নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে লিপিবদ্ধ করুন এবং সেগুলো ছুড়ে ফেলে দিনঃ
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে কাগজে-কলমে লিখে সেই কাগজটি ছিঁড়ে ফেললে কিংবা পুড়িয়ে ফেললে ক্ষণস্থায়ী কিন্তু পর্যাপ্ত মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। তাই, আপনার মনের নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে একটি কাগজে লিখে ফেলুন এবং সেটি ছিঁড়ে বা পুড়িয়ে ফেলুন।

৩। চলে যান প্রকৃতির খুব কাছেঃ
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা আর মানসিক চাপের অত্যাচারে আপনি যখন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, প্রকৃতিই তখন হয়ে উঠতে পারে আপনার একমাত্র আশ্রয়স্থল। আপনার কর্মস্থল থেকে বের হয়ে চলে যান সবুজে ঘেরা কোন স্থানে। যদিও ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সবুজের উপস্থিতি যথেষ্টই কম। তবে ঢাকার রমনা পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলদা গার্ডেন, জিয়া উদ্যানসহ আরও কয়েকটি স্থানে রয়েছে সবুজের প্রাচুর্য। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত একবার সবুজের মাঝে নির্দিষ্ট কিছু সময় ব্যয় করুন।

৪। শুনতে পারেন গানঃ
বিভিন্ন গবেষণায় এটি প্রমানিত হয়েছে যে, গান শ্রবণ মানসিক চাপ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। গানের কোমল সুর আমাদের স্নায়বিক ক্রিয়াকে স্থিতিশীল রাখে যার ফলশ্রুতিতে মানসিক চাপ প্রশমিত হয়। এখন ইন্টারনেটে মানসিক অস্থিরতা প্রশমনের অনেক গান খুঁজে পাওয়া যায় এবং সেগুলো বিনামূল্যেই ডাউনলোড করা যায়। প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাবার আগে কিছু সময় সেই গানগুলো শুনতে পারেন।

৫। করতে পারেন ব্যায়ামঃ
মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মানসিক চাপসহ হতাশা, বিষাদগ্রস্ততা, অবসাদ ইত্যাদি ব্যায়ামের মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করুন। অথবা প্রতিদিন সকাল কিংবা বিকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটুন।
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment