অটোরিকশা খুঁজতে অ্যাপ!

ভারতের রাজধানী দিল্লীর ব্যস্ত রাস্তাগুলোয় প্রতিনিয়ত শা-শা করে ছুটে যায় অসংখ্য সবুজ রঙের ত্রি-চক্র অটো রিকশা। এই শহরের অধিবাসীদের অন্যতম বিড়ম্বনা হলো অটো রিকশা খুঁজে বেড়ানো। প্রতিকূল আবহাওয়া বা হাতে সময় কম থাকলে সেই হয়রানির মাত্রা যেন আরো বেড়ে যায়। তবে সবচেয়ে ভুগতে হয় পর্যটকদের।

মানুষের এই প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে দিল্লীসহ ৭টি শহরে অটো রিকশা ভাড়া করার এক অভিনব উপায় বের করেছে সেখানকার পরিবহন বিভাগ। দিল্লীতে পুচ-ও নামে একটি স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে যাতায়াতকে করেছে আরো সহজ।

এই অ্যাপের মাধ্যমে জিপিএস স্থাপিত অটো রিকশার অবস্থান জানা যায় বলে সবচেয়ে কাছের চালককে ফোন করে অটো রিকশা ভাড়া করা যায়। হিন্দি ভাষা না জানলে এসএমএসের মাধ্যমে কোথায় আছেন এবং কোথায় যাবেন তা জানিয়ে দিলেই হবে। শুধু তাই নয়, দূরত্ব এবং মিটার রেট হিসাব করে অ্যাপটি জানিয়ে দেবে সঠিক ভাড়ার পরিমাণ। চালকরাও ব্যবসার ক্ষেত্রে এই অ্যাপকে সুবিধাজনক বলে মনে করে। চালকরা জানান, 'আমাকে যাত্রীরা ফোন দিলে আমি জেনে নেই তারা কোথায় আছেন আর কোথায় যাবেন। ফোন পাওয়া মাত্র পৌঁছে যাই। অযথা পথে পথে যাত্রী খুঁজে সময় নষ্ট করতে হয় না। যাত্রীদের সঙ্গে ফোনেই চুক্তি করে নেই। এজন্য ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করতে হয় না। এতে যাত্রীদেরও সুবিধা আর আমাদেরও ভালোই আয় হয়।' দক্ষিণের ব্যাঙ্গালুরু শহরের চিত্র প্রায় একই রকম। এখানেও যাত্রী খুঁজতে গিয়ে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হয় বলে লাভের জন্য ৭শ থেকে ৮শ রূপি আয় করতেই কারো কারো নাভিশ্বাস উঠে যায়, যাত্রীদেরও ভোগান্তি কম নয়। এসব সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে সেখানকার এমগাড়ি নামে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় সুবিধা এটি মিটার রেটে ভাড়া নেয়। আর ফি হিসেবে নেয় মাত্র ৫ রুপি। দিল্লীর মতো এখানে অটো রিকসায় জিপিএস সুবিধা বা চালকের স্মার্টফোন থাকার প্রয়োজন নেই। তাদের হট লাইনে ফোন করলেই হবে।

এমগাড়ি কর্তৃপক্ষ বলেন, 'যাত্রীদের ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেখানে অটো রিকসা পাঠিয়ে দেই। এতে সময় বেঁচে যায়, জ্বালানি সাশ্রয় হয় আর যাত্রীদেরও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয় না। এতে প্রতিষ্ঠানের লাভের খাতা শূন্য হলেও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত থাকে। চালকদের বিস্তারিত বর্ণনাসহ কে কোথায় আছে তা সহজেই জানা যায়। একজন যাত্রী যখন আমাদের চালকের নাম, পরিচয়, নিবন্ধনের প্রমাণপত্র, ফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে। তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা নিরাপদ বোধ করে। এজন্য নারী যাত্রীদের কাছে সেবাটি অনেক পছন্দের' নতুন এই প্রযুক্তি বলে একদিকে কমছে যাত্রীদের ভোগান্তি। অন্যদিকে চালকদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। যাতায়াত নিরাপদ ও সুগম করতে ভারতের এই দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে।
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment