ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল: ক্যামেরা ব্যাগ–কি দেখে কিনবেন

আপনাকে যদি ক্যামেরা (অথবা ভিডিও ক্যামেরা) নিয়ে বাইরে যেতে হয় তাহলে প্রয়োজনীয় জিনিষগুলির একটি হচ্ছে ব্যাগ কিংবা কেস। ক্যামেরা এবং অন্যান্য সবকিছুকে শুধু সহজে বহন করাই না, বরং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ক্যামেরাকে রক্ষা করে এগুলি। এমনকি হঠাত আসা বৃষ্টি থেকেও। আপনার প্রয়োজনীয় ব্যাগ বাছাই করার জন্য যে বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে; ব্যাগের মাপ সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় হচ্ছে যে আপনার ক্যামেরার মাপের সাথে ব্যাগ মানানসই কিনা। যদি কম্প্যাক্ট ক্যামেরা হয় তাহলে কোমড়ে ঝুলানো পাউচ থেকে শুরু করে ছোট আকারের সোল্ডার ব্যাগ যথেস্ট হতে পারে। যদি এসএলআর হয়, সাথে একাধিক লেন্স এবং ফ্লাশ থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাদের সবগুলির জন্য যায়গা আছে দেখে ব্যাগ পছন্দ করতে হবে। বডিসহ একটি লেন্স, ২টি লেন্স, ৩টি লেন্স ইত্যাদি নানাধরনের মাপে ব্যাগ তৈরী করা হয়। এর ওপর রয়েছে মডেলের বিষয়। এসএলআর ক্যামেরাগুলি ছোট, মাঝারী, বড় এই প্রধান তিনটি মাপের হয়। ব্রান্ড ভিত্তিক পার্থক্যও রয়েছে। আপনি নাইকন ক্যামেরার ব্যাগ কেনার সময় ক্যানন ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যবহার কিনবেন না এটাই স্বাভাবিক। কাজেই ব্যাগ কেনার আগে নির্দিস্ট মডেল এবং সাথে আনুসাঙ্গিক যাকিছু রয়েছে সেগুলি হিসেব করে ব্যাগ খোজ করুন। নির্দিষ্টভাবে ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যাগই ব্যবহার করুন। সেখানে ক্যামেরা এবং লেন্সের জন্য সঠিক মাপের যায়গা করা থাকে। ব্যাগের ধরন ক্যামেরা ব্যাগের জন্য কয়েকটি ধরন প্রচলিত, হোলষ্টার, স্লিং, সোল্ডার, ব্যাকপ্যাক, রোলিং ইত্যাদি। একেবারে ছোটর জন্য হোলষ্টার, ছোট থেকে মাঝারী ক্যামেরার জন্য সোল্ডার, ছোট-মাঝারী থেকে বড়র জন্য ব্যাকপ্যাক এবং একেবারে বড় ব্যাগ হিসেবে রোলিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। আপনি যেধরনের ব্যাগ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেধরনের ব্যাগ বেছে নিন। সাধারনত যারা বন-জঙ্গল-পাহাড়ে ছবি উঠাতে যান তারা পছন্দ করেন সোল্ডার অথবা ব্যাকপ্যাক। সফট ব্যাগগুলি এধরনের কাজের জন্য বেশি উপযোগি। আর গাড়িতে চলাফেরা করলে কেস (বাক্সের মত) ব্যবহার বেশি নিরাপদ। আঘাত পেলেও ক্যামেরার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কি দিয়ে, কিভাবে তৈরী ব্যাগ কত ভালভাবে তৈরী তার ওপর নির্ভর করে সেটা ক্যামেরাকে কতটা নিরাপত্তা দেবে। ভাল ব্যাগগুলি দীর্ঘস্থায়ী। অনেক ব্যাগই ওয়াটারপ্রুফ। বৃষ্টির ঝাপটা এলেও ভেতরে পানি ঢোকে না। ব্যাগটি কোন ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরী সেটা দেখে নেয়া জরুরী। যারা প্রকৃতির ছবি উঠান তারা পরিবেশবান্ধব জিনিষপত্র ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। যেমন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তাদের তৈরী ব্যাগ সম্পর্কে বলে সেগুলি পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব। তাতে প্লাষ্টিক জাতিয় কোনকিছু ব্যবহার করা হয় না। ক্যানভাস কাপড় এবং মেটাল ব্যবহার করা হয়। ব্যাগের দাম দাম অবশ্যই একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে কমদামী ব্যাগ পাওয়া যায়, মাঝারী ব্যাগের জন্য ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। কেসের দাম আরো বেশি। কিন্তু আপনি যখন লক্ষ টাকার ক্যামেরা বহন করবেন তখন এখানেই বা খরচ কমাবেন কেন ? আপনার মুল্যবান ক্যামেরা রক্ষার জন্য খরচ কিছুটা বেশি হলেও ভাল ব্যাগ ব্যবহার করুন। একেবারে কমদামে কিছু ব্যাগ পাওয়া যায় যেগুলি বাইরে থেকে মুল কোম্পানীর ব্যাগের মতই দেখায়। সেগুলি কেনার সময় ক্যামেরা, লেন্স ইত্যাদির জন্য প্যাডের ব্যবস্থা আছে কিনা, ক্যামেরা নড়াচড়া করবে কিনা এই বিষয়গুলি দেখে নিন। ব্যাগ দেখতে কেমন আপনি নিশ্চয়ই এমন ব্যাগ চান যা আপনার মনের মত সুন্দর। ব্যাগের ডিজাইন, রং ইত্যাদি ব্যাক্তিগত পছন্দের বিষয়। তারপরও, একজন ফটোগ্রাফার সুন্দর কিছু পছন্দ করবেন এটাই স্বাভাবিক। এদিকটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখে নিন। ব্যাগ কার তৈরী যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যাগ কোন কোম্পানী তৈরী করেছে তাতে কিছু যায় আসে না। তাহলেও যারা ব্যাগ তৈরী করে খ্যাতিলাভ করেছে তাদের ওপর নির্ভর করা তুলনামুলক সহজ। কাজেই ব্যাগ কেনার সময় বিশ্বখ্যাত নাম যেমনlowepro, Kata, National Geographic, Think Tank,Domke, Crumpler, Tamrac, M-Rock, Billinghamএদের প্রাধান্য দিতে পারেন। ব্যাগ কেনার আগেই ইন্টারনেটে সেই ব্যাগ সম্পর্কে জেনে নিন। এজন্য www.cambags.com এর মত ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment