ভাল ব্লগার বনাম ভাল ভিজিটর

কিভাবে ভাল ব্লগার হওয়া যায় এই বিষয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করলে হাজার হাজার উপদেশ পাওয়া যাবে। কিন্তু সংখ্যায় ব্লগারের তুলনায় বহুগুন বেশি ভিজিটরদের কি বৈশিষ্ট প্রয়োজন সে সম্পর্কে খুববেশি লেখা কি পাওয়া যায়? হয়ত না। অথচ ব্লগার সফল তখনই যখন তিনি ভিজিটর পান। বিষয়টা আপনি দোকান খুলে বসলে থাকলেন অথচ ক্রেতা পেলেন না, কিংবা বই লিখে ছেপে অপেক্ষা করলেন সেই বই কেউ পড়ল না অবস্থার মত। ভিজিটরদেরও কিছু ভাল বৈশিষ্ট থাকা প্রয়োজন হয়। অন্যভাবে বললে, তাদেরকেও শেখাতে হয়। সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা উদাহরন। কোরিয়ায় প্রায় সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। একজন যুবক তার ব্লগে অর্থনিতক মন্দার কথা আগেই উল্লেখ করে রীতিমত ঝড় তুলেছিল। তার কোন পোষ্ট জমা হওয়ার সাথেসাথে হাজার হাজার কমেন্ট লেখা হত। মন্দ অর্থনীতির জন্য অর্থমন্ত্রী ভুমিকা রয়েছে এমন কথা বলায় মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। বিষয়টা হচ্ছে, তিনি যাই লিখুন না কেন, ভিজিটররা সাড়া না দিলে কিছুই ঘটত না। আরো কোটি কোটি ব্লগের মত আরেকটা ব্লগ হিসেবে থেকে যেত। তিনি ব্লগার হিসেবে সফল হয়েছেন কারন সাধারন মানুষ যে বিষয়ে আগ্রহি সেই বিষয়ে তিনি লিখেছেন। সাধারন মানুষও তাতে সাড়া দিয়েছে। সেখানে নিজের মত জানিয়েছে। এই বিষয়টি ভিজিটরের একটি বড় গুন। ব্লগের একটি বড় সুবিধে হচ্ছে মন্তব্য লেখার সুযোগ। মন্তব্য লেখার সুযোগ না রাখা বিরল ঘটনা। কোথাও কোথাও মন্তব্য লেখার জন্য সদস্য হতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরাসরি মন্তব্য লেখা যায়, বড়জোর ইমেইল এড্রেস প্রয়োজন হয়। ব্লগাররা এই মন্তব্য বিষয়টি পছন্দ করেন নানবিধ কারনে। ভিজিটর কোন পরামর্শ দিলে সেটা নিয়ে ভাবেন, কোন সমালোচনা করলে শতর্ক হন। আরেকটি বড় কারন এটা অন্যের সাথে সম্পর্ক তৈরী করে। আপনি ফেসবুক ব্যবহার করেন। সেই পরিচিতিতে যখন কোন ব্লগে মন্তব্য করবেন সেখানে আপনার পরিচয় জমা হল। আরেক ভিজিটর সেই সুত্র ধরে আপনার ফেসবুক ভক্ত হতে পারে, কিংবা আপনার কোন ফেসবুক ভক্ত আপনার সুত্র ধরে সেই ব্লগে যেতে পারে। অধিকাংশ ব্লগে লাইক বাটন রাখা হয়। সেখানে ক্লিক করে আপনি এধরনের যোগাযোগ তৈরী করতে পারেন। আর ইন্টারনেটে সোস্যাল নেটওয়ার্ক, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহারের মুল উদ্দেশ্যই যোগাযোগ তৈরী করা। কোরিয়ার উদাহরন দেয়া হয়েছে। এবারে আপনি বিভিন্ন দেশের ব্লগ ভিজিট করে সেখানে মন্তব্য, ফেসবুক লাইক ইত্যাদি পরিসংখ্যান একবার দেখে নিন। সেই দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ থেকে শুরু করে সাধারনভাবে মানুষের মানসিকতা সবকিছুরই প্রতিফলন দেখতে পাবেন। যে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যত বেশি সেই দেশে এধরনের কার্যক্রম তত বেশি। অন্যভাবে বললে, মন্তব্য লেখা ভিজিটরদের জন্য সোস্যাল নেটওয়াকিং এর প্রথম ধাপ। এপ্রসংগে নতুন ভিজিটরদের আরেকটি কথা জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। লক্ষ্য করলে দেখবেন মন্তব্যে কখনো আক্রমনাত্বক বা আপত্তিকর বক্তব্য লেখা হয় না। সাইট যিনি দেখাশোনা করেন তিনি অনেক সময় অনুমোদন করার পর সেটি প্রকাশ হয়, যদি সরাসরি প্রকাশের ব্যবস্থা থাকেও যেকোন সময় তিনি সেটা মুছে দেবেন। যদি মন্তব্য লিখতে আগ্রহি হন, আক্রমনাত্বক ভাষা ব্যবহার করবেন না। সেটা যে ওয়েবসাইটই হোক।
Share on Google Plus

About K. M. Emrul Hasan

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment